সেই মুসলিম স্বাধীনতা সংগ্রামীবীরদের নাম আজও অজানা   

 প্রতি বছরের ১৫ই আগস্ট  ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে সারা ভারতে সেজে উঠে খুশির উদযাপন। আর  প্রতি বছরের ন্যায় এই বৎসরেও  ভারত মানাবে ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস  এই স্বাধীনতা আমরা খুব সহজ ভাবে পাইনি। শত সহস্র ভারতীয়দের নিরলস প্রচেষ্টা ও রকমারী আন্দোলন এর পিছনে রয়েছে। পিছনে রয়েছে রক্তরাঙা ইতিহাস, ফাঁসির মঞ্চ তথা দ্বীপান্তরের অকল্পনীয় লোমহর্ষক কাহিনী।

   সুতরাং এই অবসরে সেই সব বীরগণকে স্মরণ করা, তাঁদের প্রতি শ্রোদ্ধা জ্ঞাপন করা প্রত্যেক ভারতীয়র দায়িত্ব। তাই আমরা উক্ত দিনটিকে অত্যান্ত গুরুত্ব দিই এবং নানা রকমের অনুষ্ঠান করি। বিভিন্ন মঞ্চে সেই সব বীরপুরুষদের বিরত্বের অমর কাহিনী তুলে ধরা হয়। ফলতঃ আমরা শৈশব থেকেই শুনে আসছি মাননীয় মহন দাস করম চাঁদ গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম বসু,মাতঙ্গিনী হাজরা,ঝাঁসির রাণী লক্ষী বাঈ, ভগত সিং,তাতিয়া টোপির মতো অমুসলিম প্রমুখ  যোদ্ধাদের নামগুলো।

  

 এখান থেকে একটা প্রশ্ন জাগে যে তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমদের কোন অবদান ছিলনা? তারা এবিষয়ে কিছুই করেনি? বরং তারা কেবল লোকদর্শক হয়ে থেকেছে? তারা এদেশের কেবল খেয়েছে, দেশকে ভালোবাসেনি, দেশকে কিছু দেয়নি? তারা স্বার্থপর, অকৃতজ্ঞ? আর যদিও নাম শুনা যায় শুধুমাত্র  বিশেষ কিছু ব্যাক্তিদের যেমন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,আব্দুল গফুর খান , শওকত আলী ও মৌলানা আলী জাওহার প্রমুখ। 

এই প্রশ্নের বা এই অভিযোগ ও অপবাদের উত্তর দেওয়ার জন্য পরবর্তী বাক্যগুলো তুলে ধরা হলো। আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা ঠিক এভাবে হয়েছিল যে যখন প্রায় সমগ্র ভারত ব্রিটিশদের আয়ত্বাধীন হয়ে যায় তখন ব্রিটিশ প্রশাসন বিশেষ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে। যথা (১) ভারতে যত মাদ্রাসা ও ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তা বন্ধ করে দেয়া হয় আর সে সবের বদলে স্কুল চালু করা হয়।

   এই সকল স্কুলে এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে হিন্দু, মুসলিম ইত্যাদি সমস্ত সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের একই ধরনের শিক্ষা নিতে বাধ্য করা হয়। অত্র স্কুলগুলোতে প্রথম দিকে উদারতা দেখিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পঠনপাঠন চালু করলেও পরবর্তীতে সকল স্কুলের মূল লক্ষ্য, খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচার প্রসার হয়ে দাঁড়ায়। ফলতঃ ভারতীয়দের মধ্যে এমন আশঙ্কা দানা বাঁধে যে পরবর্তীতে সমস্ত ভারতীয়রা যেন খ্রীষ্টান না হয়ে যায়! একারণে সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয় এবং অসন্তোষ দেখা দেয়।

(২) গুলির খোলের যে অংশটি দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে গুলি বের করতে হতো সেই অংশটিতে গাই ও শুকরের চর্বি লাগিয়ে দেওয়া শুরু হলো। গাই এর চর্বি লাগানো কার্তুজ গুলো হিন্দুদের আর শুকরের গুলো মুসলিমদের দেওয়া শুরু হলো। স্বভাবতই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ বেজায় ক্ষিপ্ত হয়ে গেল।

 ‌(৩) ভারতবর্ষে উৎপন্ন সমস্ত আনাজ,শস্য ও খনিজ পদার্থ কেউ ব্যক্তিগত ভাবে স্বাধীন হয়ে অন্য কাউকে বিক্রি করতে পারবেনা। বরং ঐ সমস্তই বাধ্যতামূলক ব্রিটিশ সরকারকে বিক্রি করে দিতে হবে। অতঃপর প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকেই ক্রয় করতে হবে।

    সম্ভবতঃ এই আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাজারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশদের হাতে চলে যাওয়া। যার ফলে ভারতবাসীরা পূর্ণ ভাবে ব্রিটিশদের প্রতি আস্থায়ীত হয়ে যেতো। জনগণ অসহায় হয়ে পড়ত আর তারা স্বেচ্ছামতো চড়া দামে বিক্রি করতো। হয়তো অনাহারে অনেকেই মারাও যেতো। চারিদিকে হাহাকার,অনাহার বিরাজ করতো। এমন অভাব অনটন ও দারিদ্রতার পরিবেশে ব্রিটিশরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারত। তাই আমাদের দূরদর্শী বিদ্যানগণ এর ভয়াবহতা অনুভব করে আমাদের সমাজকে জাগাতে শুরু করেন এবং প্রচণ্ড বিরোধীতায় মুখর হন।

(৪) কোন মুসলমান খাতনা (মুসলমানী/সুন্নাত) করতে পারবেনা।

(৫) মহিলাদেরকে পর্দা ছাড়াই বের হতে হবে। হেজাব পড়ার কোন প্রকার অনুমতি থাকবেনা।

   ‌এই ধরনেরই আরো বেশ কিছু বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল যা আমাদের চিন্তাশীল , দূরদর্শী বুদ্ধিজীবী এবং বীর পূর্বপুরুষ গণ কোন মতেই মেনে নিতে পারেননি। তাই কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও সংগ্রাম শুরু করে দেন। এভাবেই স্বাধীনতা সংগ্রামের শুভ সূচনা হয়ে যায়।

   এই প্রেক্ষাপটে আমরা ইতিহাস ঘেঁটে জানতে পারি যে এই বিদ্রোহের যিনি মূল কাণ্ডারী এবং মুখ্য উদ্যোক্তা তিনি হলেন ভারতীয় শীর্ষ আলেম অমর শহীদ হজরত আল্লামা মাওলানা ফজলে হক খয়রাবাদী।( রহমাতুল্লাহি আলায়।) ইনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি তদানীন্তন শীর্ষ আলেমদের সমর্থন আদায় করে জেহাদের ফাতওয়া দিয়েছিলেন।

   এই ফাতওয়া প্রকাশ হওয়ার পর সমগ্র ভারত জুড়ে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।  এবং যদিওবা সমস্ত ভারত বাসী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয় কিন্তু বিশেষ ভাবে মুসলিম সমাজ মন প্রাণ হৃদয় দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইংরেজরা হিমশিম খেয়ে যায়।

  ঘটনা হলো, ইসলামের ওপর বহু মুখি আক্রমণ, মুসলিমদের প্রতি নির্মম অত্যাচার এমনকি তাদেরকে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র ইত্যাদি  সব আল্লামার হৃদয়কে বিগলিত করে দেয়। তিনি বিভিন্ন আলেম ওলামার সাথে পরামর্শ করেন। এমনকি সম্রাট দ্বিতীয় শাহ্ জাফর এবং জেনারেল বখত খান সাহেবের সাথেও আলোচনা সেরে নেন। সকলের সমর্থন পেয়ে জেহাদের ফাতওয়া দেয়ার কথা মনস্থ  করেন। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার দিল্লির শাহী জামে (জামা) মসজিদে জুম্মা নামাজ পর আল্লামা ফজলে হক খয়রাবাদী মসজিদ ভরা মুসল্লিদের সামনে আবেগ ভরা কড়া ভাষণ দেন। ভাষণ মধ্যে তিনি জেহাদের ফজিলত ও গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং জেহাদ করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন। ভাষণ শুনে শ্রোতাগণ আবেগ আপ্লুত হন। চতুর্দিক থেকে জেহাদ জেহাদ ধ্বনি ওঠে।

   ভাষণ শেষে সেদিন জামে মসজিদে যত বড় বড় আলেম ছিলেন সকলের কাছে তিনি এই মর্মে ফাতওয়া জানতে চান যে," ব্রিটিশরা অন্যায় ভাবে আমাদের দেশ দখল করে রয়েছে। তারা ইসলামী রীতিনীতি মিটিয়ে দিচ্ছে। ইসলামী শিক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। মহিলাদের পর্দার প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। খাতনা বা মুসলমানী করার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমতাবস্থায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা জেহাদ করা মুসলমানদের ওপর ফরজ, না ফরজ নয়?"

  এই প্রশ্ন হওয়ার পর সেদিন জামে মসজিদে যত জন সুন্নী ওলামা, মাশায়েখ ছিলেন যাঁদের সংখ্যা ৩৩ বলা হয় সকলেই এক সুরে সুর মিলিয়ে যৌথভাবে ফাতওয়া দেন " বর্তমান পরিস্থিতিতে পবিত্র শরীয়তের আলোকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জেহাদ করা মুসলমানদের ওপর ফরজ।" এই ফাতওয়া টি সে যুগের বিখ্যাত উর্দু সংবাদপত্র ' আল যাফার ' নামক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। 

১৮৫৭ সালের অভ্যুত্থান একটি জিহাদ বলে ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন রহমতুল্লাহ কাইরনবী, সদরুদ্দিন খান আজুরদা, সরফরাজ আলী এবং ফজলে হক খায়রাবাদী সহ দিল্লির ত্রিশজন পণ্ডিত। আলেমদের মধ্যে অবস্থানের কারণে তিনি বহু আলেমকে প্রভাবিত করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে বিদ্রোহের অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন মাওলানা আহমদুল্লাহ শাহ মাদ্রাসি। মাদারাসি ছিলেন ভারতীয় বিদ্রোহী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা যিনি সমস্ত অবধ অঞ্চলে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন। 

যে ৩৩ জন সুন্নী বীর ওলামা মাশায়েখ গণ উক্ত ফাতওয়াটি দিয়েছিলেন তাঁদের সুনাম গুলো হলো : 

১ জনাব মুহাম্মাদ নাযীর হোসেন সাহেব

২ জনাব রহমাতুল্লাহ সাহেব

৩ জনাব মুফতী সদরুদ্দীন আযুর্দা সাহেব

৪ জনাব মুফতী এক্রামুদ্দীন সাহেব

৫ জনাব মুহাম্মাদ মীর খান সাহেব

৬ জনাব আব্দুল কাদির সাহেব

৭ জনাব আহমদ সাঈদ আহমাদী সাহেব

৮ জনাব মুহাম্মাদ জিয়াউদ্দীন সাহেব

৯ জনাব মুহাম্মাদ আব্দুল কারীম সাহেব

১০ জনাব মুহাম্মাদ কারীমুল্লাহ সাহেব

১১ জনাব সিকান্দার আলী সাহেব

১২ জনাব মুহাম্মাদ সরফরাজ সাহেব

১৩ জনাব সৈয়দ মাহবুব আলী জাফারী সাহেব

১৪ জনাব মুহাম্মাদ হামীমুদ্দীন সাহেব

১৫ জনাব সৈয়দ আহমদ আলী সাহেব 

১৬ জনাব এলাহী বখশ সাহেব

১৭ জনাব মুহাম্মাদ আনসার আলী সাহেব

১৮ জনাব  মৌলভী সাঈদুদ্দীন সাহেব

১৯ জনাব হাফীজুল্লাহ্ সাহেব

২০ জনাব মুহাম্মাদ নুরুল্লাহ সাহেব

২১ জনাব হায়দার আলী সাহেব

২২ জনাব ইউসুফুর রহমান সাহেব

২৩ জনাব মৌলভী ফরীদুদ্দীন সাহেব

২৪ জনাব সৈয়দ আব্দুল হামীদ সাহেব

২৫ জনাব মুহাম্মাদ হাশিম সাহেব

২৬ জনাব মুহাম্মাদ ইমদাদ আলী সাহেব

২৭ জনাব মুহাম্মাদ মুস্তফা খান সাহেব 

২৮ জনাব মুহাম্মাদ ইমদাদ আলী সাহেব

২৯ মুফতী মুহাম্মদ রহমত আলী সাহেব 

৩০ জনাব সৈয়দ মুহাম্মাদ সাহেব

৩১ জনাব মুহাম্মাদ আলী সাহেব

৩২ জনাব মৌলভী মুহাম্মাদ আলী সাহেব

৩৩ জনাব আব্দুল গণি সাহেব ( এই নামটিতে মতভেদ আছে)

 বিঃ দ্রঃ= উল্লেখ থাকে যে এঁরা সকলেই ভারত বিখ্যাত শীর্ষ আলেম ছিলেন কিন্তু লেখনীটা যেন অতি দীর্ঘ না হয়ে যায় তাই খেতাব গুলো বাদ দিয়ে কেবল মূল নাম গুলো উল্লেখ করা হলো।

   আর এও মনে রাখা দরকার যে এঁদের মধ্যে অনেকেই সরকারী বিভাগের পদাধিকারী ছিলেন। বড়ো বড়ো পদে পদাসীন ছিলেন

যেমন হজরত মুফতী সদরুদ্দীন আযুর্দা সাহেব।

ঐ ৩৩ জন ওলামা মাশায়েখের ফাতওয়া ছাড়াও আল্লামা ফজলে হক খয়রাবাদী স্বয়ং নিজেও জেহাদ অজিব হওয়ার একটি স্বাতন্ত্র ফাতওয়া ‌উক্ত সংবাদপত্রে প্রকাশ করান।

 এই সম্মিলিত ফাতওয়া মুসলিম সমাজের প্রতি বিশেষ  প্রভাব ফেলে। সারা ভারত ব্যাপী ইংরেজদের বিরুদ্ধে আক্রোশ ফুটে ওঠে এবং  সবাই জেহাদ করতে উদ্যত হয়। ফলতঃ ৯০ হাজার  মুজাহিদ ( ইসলামী যোদ্ধা) তদানীন্তন ইসলামী শাসক (বাদশাহ )বাহাদুর শাহ জাফরের পতাকা তলে একত্রিত হয়। বলে রাখা ভালো যে এরা কেউই প্রশিক্ষিত সৈন্য, সিপাহী ছিলনা বরং সবাই জনসাধারণ ও গ্রামীণ, প্রান্তিক এলাকার মানুষ ছিল।

এদের সাথে সৈন্য, সিপাহীদের গণণা করলে সংখ্যাটা এক লাখ ছাপিয়ে যায়।

    ই বিপুল জনসংখ্যা জমা হওয়ার মূলে কে ছিলেন?

এর মূলে ছিলেন হজরত আল্লামা ফজলে হক খয়রাবাদী রহমাতুল্লাহি আলায় যার উজ্জ্বল প্রমাণ আপনারা পূর্বের বয়ান থেকে পেয়েছেন। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে আল্লামা ফজলে হক খয়রাবাদী-ই হচ্ছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক।

 

আজ আমরা যেই মুসলিম সংগ্রামীদের নাম শুনতে পাই সেটা শুধু মাত্র গোষ্ঠীগত কারণের ফল। ১৮৫৭ সংগ্রামের পূর্বে ও পরবর্তীতে যে জব মুলিম বিদ্রোহের নাম শুনা যায় সব গুলো ওহাবী বিদ্রোহ , ফরাজী আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনে আবদ্ধ আর এর কারণ বেশ কিছু ওহাবী মতলম্বীরা ও কোনঠাসা ব্রিটিশ।ফজলে হক ও উদ্ধৃত ইসলামের সৌনিক দের নাম আজও অজানা। এমনকি ঐতিহাসিক গোলাম আহমদ মুর্তুজার লেখা ' চেপে রাখা ইতিহাস'এ ও অনেক কিছু তথ্য চেপে রাখা হয়েছে নয়তো তিনি এই সব তথ্যকে পরিপক্ক ভাবে উল্লেখ করতে চাইনি। 

তথ্যসূত্র :

১- https://bradscholars.brad.ac.uk/handle/10454/6296

২- https://www.academia.edu/34992892

 ৩-Malleson, George Bruce (1880). https://archive.org/stream/historyindianmu01mallgoog#page/n590/mode/1up/search/ulla. Vol. 3 (2st ed.). pp. 590–591.

 ৪- Sircar, Jawhar (8 May 2017). "https://www.dnaindia.com/analysis/column-andaman-s-cellular-jail-holds-lessons-for-the-current-indian-polity-2430535”. DNA India.   

৫- https://books.google.com/books?id=kl08TgBBxHIC&pg=PA213

   

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter